জীবন চলার পথে

সাইফুল সাহেব আমাকে নিয়ে কোনার দিকে একটা খালি গোল টেবিলের পাশেই চেয়ার টেনে বসলো।
গোলাকার টেবিলটার পাশে বসতেই, রঙীন আলোর মোহনীয় এই পরিবেশে, অর্ডার নেবার জন্যে যে টপলেস মেয়েটি এগিয়ে এলো, তার বক্ষ দেখে হঠাৎই মনে হলো, একটা আস্ত বাংলা সাবান, দু টুকরো হয়ে, মেয়েটের বুকের উপরই লেপটে আছে। কারন, মেয়েটির সুঠাম স্তনের বোটা গুলো যেমনি অত্যাধিক ছোট, ঠিক তেমনি রংটাও হালকা সাদাটে গোলাপী। যার কারনে রঙীন আলোর বন্যার মাঝে, ফর্সা এই মেয়েটির গায়ের রং আর স্তন বোটার রং এর কোন পার্থক্য অনুমান করা যাচ্ছিলো না। আমার খুবই ইচ্ছে করছিলো, এখুনি মেয়েটির বুকের উপর থেকে, যে কোন একটি দুধ কেড়ে নিয়ে, বাথরুমে গিয়ে ঢুকি। তারপর সারাগায়ে মেখে, দেহের ঘাম গুলো সরিয়ে নিই, এই মেয়েটির দুধের স্পর্শেই। তবে, এত কাছাকাছি মেয়েটির নগ্ন বক্ষ দেখে, লিঙ্গটা সত্যিই মোচর খেয়ে উঠলো। সেই সাথে মায়াও জমে উঠলো। এত সুন্দর চেহারা, এত সুন্দর বক্ষ! যে কোন কারোর প্রেমিকা কিংবা জীবন সংগিনীও তো হতে পারতো! কেনোনা, এমন চেহারার মেয়ে, যে কোন ছেলেরই পছন্দ হবার কথা! কি জানি কেনো, হয়তোবা জিবীকার খাতিরেই এমন একটি পেশা বেছে নিয়েছে।
সাইফুল সাহেব আমাকে লক্ষ্য করেই বললো, কি খাবেন? হুইস্কি নাকি ভোদকা!
আমি বললাম, বিয়ার চালালে কেমন হয়? মদ আমি খুব একটা পছন্দ করিনা।
সাইফুল সাহেব মেয়েটিকে লক্ষ্য করে বললো, দু গ্লাস বিয়ার, ছোলা সেদ্ধ, আর আপেল আছে?
মেয়েটি নিজে থেকেই বললো, বিদেশী তাজা আঙুর আছে, দেবো?
সাইফুল সাহেব বললো, ঠিক আছে।

এই বারের কোনার দিকে যে গোলাকার টেবিলটার পাশে আমরা বসেছিলাম, সেটা আসলে বারের কোনার দিক ছিলো না। এই কোনার দিকে এতক্ষন যেটা জানালার পর্দার মতো মনে হয়েছিলো, সেটা দুদিকে সরে যেতেই অনুমান করলাম, আলোময় বিশাল এক মঞ্চের একেবারে সামনা সামনি টেবিলেই বসে আছি। সাইফুল সাহেব কি তাহলে, জেনে শুনেই এমন একটি ভি, আই, পি, ক্লাশের টেবিলে এসে বসেছে নাকি?
আলোময় স্টেজের দিকে তাঁকাতেই লক্ষ্য করলাম, অত্যাধুনিক বাদ্যযন্ত্রের সরঞ্জাম নিয়ে সারি হয়ে রয়েছে বাদ্য বাদকেরই ছোট একটি দল। সাদা শার্টের সাথে কালো সু্যট পরা, মাঝবয়েসী একটি লোক ঠিক মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে ঘোষনা করলো, সুধী অতিথিবৃন্দ, শুভ সন্ধ্যা। আজকের এই চমৎকার সন্ধ্যায়, আপনাদের মনোরঞ্জনে রয়েছে, মাতাল করা, মন মাতানো উত্তাল নৃত্যের আয়োজন! প্রথমেই নৃত্য পরিবেশন করার জন্যে আমন্ত্রন জানাচ্ছি, আপনাদের প্রিয় মুখ, প্রিন্সেস ডালিয়া।
প্রিন্সেস ডালিয়ার নাম ঘোষনার সাথে সাথেই, আগত সকল কাষ্টোমারদের করতালি, আর শীসের মুর্ছনায় হল ঘরটা পরিপূর্ন হয়ে উঠলো। সেই সাথে ড্রাম বাদকের পাগলা এক ড্রাম বাজনা শুরু হলো। ড্রাম বাজনার তালে তালেই নৃত্যের ছন্দেই, মঞ্চে এসে ঢুকলো অপরূপা পোষাকে আবৃত এক পরীর মতোই নর্তকী। বিদেশী মিউজিকের সুরে সুরেই, যৌন বেদনায় পরিপূর্ন মূদ্রায় নৃত্য করতে থাকলো
হঠাৎই মিউজিক পরিবর্তিত হয়ে ভারতীয় একটি গানের সুরই ভেসে এলো। এমন একটি গানের সাথে, কেমন নৃত্য হতে পারে, তা বোধ হয় ভারতীয় একটি ছবিতে, কোন এক নৃত্য পরিচালক নিজ পছন্দ মতোই নৃত্য পরিচালনা করেছিলো। অথচ, প্রিন্সেস ডালিয়া সেই গানটির সাথে নুতন এক নৃত্যেরই যেনো সূচনা করলো। যে নৃত্যের প্রধান উদ্দেশ্যই বুঝি, বিশাল পাছা আর বৃহৎ বক্ষ যুগলের দোলন নৃত্য প্রদর্শন করা! যাত্রা মঞ্চে ভ্যারাইটি শো তেও এমন নৃত্য অনেকের দেখার কথা। তবে, প্রিন্সেস ডালিয়া যেটি করতে থাকলো, তা হলো নৃত্যের তালে তালে পরনের পোষাক একটি একটি করে খুলতে থাকলো। যা ভারতীয় ছবিটির মূল গানের দৃশ্যে থাকার তো প্রশ্নই নেই, বরং অন্য কোন ভ্যারাইটি শো তেও আশা করা অবান্ছনীয়।
কোন ফাঁকে যে উর্ধাংগটা নগ্ন হয়ে গেলো, টেরই পেলাম না। এত সুন্দর সুঠাম বক্ষ! আর এত চমৎকার তার দোলন! আমি ঢক ঢক করেই পুরু এক গ্লাস বিয়ার গিলে ফেললাম। তারপর টপলেস গার্লকে ইশারা করে বললাম, আরেক গ্লাস বিয়ার।
হঠাৎ গানের রিদমও বদলে গেলো। পাগলা এক রিদম শুরু হলো। সেই সাথে শুরু হলো প্রিন্সেস ডালিয়ার পাগলা বক্ষ নৃত্য! আর থেকে থেকে নিম্নাংগের হাঁটু পর্য্যন্ত দীর্ঘ ঘাগরাটাও উরু পর্য্যন্ত তুলে তুলে, যৌন বেদনাই জাগিয়ে তুলতে থাকলো। প্রিন্সেস ডালিয়ার বক্ষ দোলে, আমার মাথাটাও দোলে, প্রিন্সেস ডালিয়ার পুচ্ছ দোলে, আমার লিঙ্গটাও দোলে দোলে উঠে। আমার গলাটাও শুকিয়ে আসতে থাকলো। টপলেস গার্ল বিয়ার আনতে এত দেরী করছে কেনো?
শুধু আমি নই, হলঘরের সবাই কেমন যেনো পাগলা হয়ে উঠতে থাকলো। সবাই আনন্দ ধ্বনি প্রকাশ করে করে, টাকা ছুড়ে ফেলতে থাকলো মঞ্চে! উদ্দেশ্যটা কি বুঝলাম না। দেখলাম, সাইফুল সাহেবও মানিব্যাগ বেড় করে, পাঁচশ টাকার একটা নোট ছুড়ে ফেললো। আমিও মানি ব্যাগটা বেড় করতে চাইলাম। সাইফুল সাহেব ইশারা করে বললো, এক টেবিল থেকে একজন দিলেই চলবে।
মঞ্চে টাকার ছড়াছড়ি দেখে, প্রিন্সেস ডালিয়ার বোধ হয় আর আনন্দের সীমা রইলো না। সে তার নিম্নাংগের ঘাগড়াটাও খোলে নিলো! অতঃপর শুরু করলো, পাগলা এক নগ্ন নৃত্য! নগ্ন নৃত্যের মাঝেই মঞ্চ থেকে নেমে এসে, হল ঘরের প্রতিটি টেবিলেই এগিয়ে যেতে থাকলো। তারপর এলো আমাদের টেবিলে। সাইফুল সাহেবের কোলে বসে, তার গালে আলতো করে চুমু বসিয়ে দিয়ে, আবারও এগিয়ে যেতে থাকলো মঞ্চের দিকে।
কেনো যেনো মনে হতে থাকলো, পৃথিবীর সবাই বোধ হয় হুশেরই পাগল। প্রিন্সেস ডালিয়া যেসব টেবিলে গিয়ে যাদের কোলে বসেছে, তারাই শুধু মঞ্চে টাকা ছুড়ে দিয়েছিলো। পাগলা নৃত্যের মাঝেও, তার চোখের দৃষ্টি বোধ হয় সেদিকেই ছিলো। সাইফুল সাহেবের উপর খানিকটা রাগই হলো। তার কারনেই, ডালিয়া আমার কোলে বসেনি। রাগ দমনের জন্যেই, টপলেস গার্ল এর এনে দেয়া পরবর্তী বিয়ারটুকুও ঢক ঢক করে পুরুটাই গিলে ফেললাম।

প্রিন্সেস ডালিয়া ভেতরের দিকে এগিয়ে যেতেই, মিউজিকের বাজনাটাও ক্রমে ক্রমে কমে আসতে থাকলো। সেই সাথে ড্রামের তালটা সমাপ্তির আভাস দিতেই, পর্দাটা নেমে আসতে থাকলো ধীরে ধীরে। সাইফুল সাহেব বললো, কেমন দেখলেন?
আমি বললাম, যা দেখানোর তা তো আপনিই দেখালেন। আমাকে টাকাও দিতে দিলেন না।
সাইফুল সাহেব বললো, এখনো তো কিছুই দেখোনি। যা দেখার সেকেণ্ড স্টেজেই দেখবেন! মাথা খারাপ হয়ে যাবে। মানিব্যাগ খালি হয়ে যাবে!
সাইফুল সাহেবের কথামতোই, মিনিট পাঁচেক পর, পুনরায় মঞ্চের পর্দাটা সরে গেলো। ঘোষক ঘোষনা করলো, এবার মঞ্চে আসছে, শরৎগঞ্জ শহরের মধ্যমণি, আপনাদের সকলের নয়নের মণি, স্বপ্নের রাজকন্যা, রাতের কামনা, মনের বাসনা, এই উপমহাদেশের প্রলয়ংকরী এটম বোম্ব, প্রি, প্রি, প্রি, প্রিন্সেস কনক!
আবারো, হল ঘরটা করতালি, শীস আর সিৎকার ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠলো। সেই সাথে ড্রাম বীট পরতে থাকলো ক্রমান্বয়ে। সেই সাথে, সাদা পরীর মতোই পোষাকে মঞ্চে এসে ঢুকলো অপরূপা এক পরী! পরীদের চেহারা কেমন হয় কে জানে? এই মেয়েটির চেহারায় রয়েছে শুধু আগুন আর আগুন! ঘোষক মিথ্যে বলেনি। সারা ভারত উপমাহাদেশই শুধু নয়, পুরু বিশ্বের পুরুষদের দেহ বিস্ফোরনও ঘটাতে পারে, এই মেয়ের মাদকতাপূর্ন চেহারা পোষাক! কেনোনা তার পোষাকেও কিছু বৈচিত্র্য আছে! কাপর দিয়ে নয়, বরং কাপরের অসংখ্য সরু ফিতে দিয়েই গড়া এই পোষাকটি। পেছন ফিরলে, পুরু পিঠটা যেমনি উদোম দেখায়, পাছা আর উরুর দিকটাও অধিকাংশ উন্মুক্ত দেখায়। আর নৃত্যের তালে তালে, সুডৌল বক্ষ দুটি শুধু দোলে দোলেই উঠে না, ফিতের ফাঁকে ফাঁকে প্রকাশিতও হয়ে পরে। যৌন বেদনা জাগিয়ে তোলার জন্যে, এর চাইতে চমৎকার পোষাক অথবা নৃত্য আর থাকতে পারে বলে আমার ধারনা নাই। প্রিন্সেস কনকের নৃত্য দেখে, আমার লিঙ্গটা যে সেই একবার দাঁড়িয়ে স্যালুট জানালো, আর নামার নাম করছে না। আমি, সাইফুল সাহেব টের না পায় মতো, জাংগিয়াটা টেনে, খানিকটা ঢিলে করে, লিঙ্গটাকে ভালোভাবে দাঁড়িয়ে থাকার জন্যে সহযোগীতা করলাম।
শুরু হলো মিউজিক। মেগা ড্যান্স ম্যানিয়াক! শুরুতেই প্রলয় নৃত্য! সাইফুল ফিশ ফিশ করে বললো, এখন ইচ্ছে করলে টাকা ছুড়তে পারেন!
আমি বললাম, কত টাকা ছুড়বো?
সাইফুল বললো, উর্ধাংগের রেট একশত টাকা। নিম্নাংগের রেট পাঁচশ টাকা! যতবার ছুড়বে, ততবারই তার দেহের একটি ফিতে উপহার পাবে। যা করার পুরোপুরি নগ্ন হবার আগেই করতে হবে!
ঘোরের মাঝে আমি সাইফুল সাহেবের কথা ভালো করে অনুমান করতে পারলাম না। তার কথা মতোই, মানি ব্যাগ থেকে একশ টাকার একটা নোট ছুড়ে ফেললাম মঞ্চে! প্রলয় নৃত্যের মাঝেই মুচকি হাসলো প্রিন্সেস কনক। মঞ্চ থেকে নেমে, আমার দিকেই এগিয়ে এলো। কি ইশারা করলো, কিছুই বুঝলাম না। সাইফুল সাহেব ফিশ ফিশ করেই ইশারা করলো, তার গা থেকে, পছন্দ মতো যে কোন একটা ফিতার গিট খুলে নিতে।
আমি বাম বক্ষের উপর থেকেই একটা ফিতে খুলে নিলাম। সাদা শুভ্র রেশমী কাপরের একটি ফিতে। আমি হাতে নিতেই কনক আমার গালে একটি চুমু উপহার দিয়ে, পুনরায় ফিরে গেলো মঞ্চে। যা বুঝলাম, কনকের নগ্ন হবার পদ্ধতিটাই ভিন্ন। দর্শকদের টাকা ছুড়ার পরই এগিয়ে যায় সেই দর্শকটির কাছে। তাদের খুলে নেয়া ফিতের কারনেই, দেহটা আংশিক নগ্ন হতে থাকলো। সাইফুল সাহেবের ব্যাপারটা কিছুই বুঝলাম না। সে কোন টাকা ছুড়ছে না। আমি কৌতুহলী হয়েই বললাম, আপনি ছুড়ছেন না কেনো?
সাইফুল সাহেব বললো, আরো পরে, অধিকাংশ নগ্ন হবার পর, কাছে আসলে আরো ভালো লাগবে না!
আমি খানিকটা রাগ করেই বললাম, তাহলে আমাকে প্রথমেই টাকা ছুড়তে বললেন যে?
সাইফুল সাহেব বললো, আমিও এভাবেই শিখেছি।
প্রিন্সেস কনকের বক্ষটা পুরুপুরিই নগ্ন হয়ে গেলো। কিছু কিছু মেয়েদের বক্ষই এমন যে, যা একবার দেখে কেনো, বারবার দেখেও মন ভরেনা। লিঙ্গ দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হয়ে, বীর্য্য নিঃসরন করার মতো পরিস্থিতিও চলে আসে, তারপরও তাঁকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে। কনক নামের এই মেয়েটির নৃত্যের তালে তালে স্পন্দিত বক্ষ যুগল ঠিক তেমনি এক ধরনেরই বক্ষ! আর সেই বক্ষ উদোম করে দেবার জন্যে, একশত টাকার নোটই যথেষ্ঠ! মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলো!
সাইফুল সাহেব হঠাৎই পাঁচশ টাকার নোট ছুড়ে ফেললো। কনক এগিয়ে এলো সাইফিল সাহেবের কাছেই। সাইফুল সাহেব কনকের নিম্নাংগ থেকে একটা ফিতে খুলে নিলো। সেই সাথে লক্ষ্য করলাম, হাত বাড়িয়ে, কনকের নিম্নাংগটাও ছুয়ে দিয়েছ! প্রিন্সেস কনক মুচকি হেসে সাইফুলের গালে একটা চুমু দিয়ে পুনরায় ফিরে গেলো মঞ্চে! আমি মনে মনে বললাম, এই কথা!
প্রিন্সের কনকের নিম্নাংগটাও অধিক নগ্ন হয়ে যাচ্ছে। ঘন কালো রেশমী কেশগুলো নজর কাঁড়তে থাকলো সবার। আর মাত্র কয়েকটি ফিতেই আছে কোমরের দিকে। আমি তাড়াহুড়া করেই পাঁচশ টাকার একটি নোট ছুড়ে দিলাম মঞ্চে। প্রিন্সেস কনক আমার কাছাকাছি আসতেই তার সর্বাংগই এক পলক উপভোগ করে নিলাম। আমি ফিতে না খুলে, তার নিম্নাংগে স্পর্শ করলাম। তারপর, মধ্যাংগুলীটা ডুবিয়ে দিতে চাইলাম যোনী ছিদ্রে! প্রিন্সেস কনক মুচকি হেসে ফিশ ফিশ করে বললো, একটু বেশী হয়ে যাবে!
সাইফুল সাহেবও আমার দিকে তাঁকিয়ে মুচকি হেসে চোখ টিপলো। যার অর্থ এই যে, চালিয়ে যাও।
আমি আমার আঙুলীটা বেশ খানিক ঢুকিয়ে দিলাম প্রিন্সেস কনকের যোনীর ভেতর। রসে পরিপূর্ন একটা উত্তপ্ত যোনী! প্রিন্সেস কনকের দেহটা যেমনি শিহরিত হয়ে উঠলো, আমার দেহটাও শিহরিত হয়ে উঠলো। প্রিন্সেস কনক বিড় বিড় করেই বললো, যথেষ্ট হয়েছে! এবার ফিতে খুলে নাও।
আমি কনকের যোনী থেকে আঙুলীটা বেড় করে, টেবিলের উপর রাখা ভিজে তোয়ালেটা দিয়ে আঙলীটা মুছে নিলাম। প্রিন্সেস কনক মুচকি হেসে বললো, মুছে ফেললে!
আমি বললাম, কি ভেবেছিলে? মুখে নেবো ভেবেছিলে?
কনক কিছু বললো না। মিষ্টি হাসলো শুধু। আমি ফিতে খুলতে খুলতে বললাম, সুন্দর তুমি!
ফিতে খুলা শেষ হতেই, কনক আমার গালে চুমু দিয়ে বললো, আবার আসবে কিন্তু!
প্রিন্সেস কনক পুনরায় ফিরে গেলো মঞ্চে। অতঃপর এক প্রলয়ংকরী টর্নেডোর মতোই নগ্ন দেহের অসাধারন এক নৃত্যে মগ্ন হলো কনক। খোপা করা চুল গুলোও খুলে, এলো চুলের সাথে, সুদৃশ্য বক্ষের মাতাল করা দোলাই শুধু উপহার দিতে থাকলো। আমার মনটাও এক প্রলয়ংকরী ঘুর্ণিঝড়ের মাঝেই উড়তে উড়তে হারাতে থাকলো অজানাতে।

মাঝে মাঝে মনে হয়, পকেটে পয়সা না থাকাটা বোধ হয় স্বাস্থ্যের জন্যেও ভালো। সেদিন সাইফুল সাহেবের খপ্পরে পরে অনেক গুলো টাকাই খরচ করে ফেলতে হলো ড্যান্স বারে। মাস শেষ হতে এখনো অনেক বাকী! তাই সিগারেট খেতে ইচ্ছে হলেও উপায় নাই। পকেটে পয়সা নেই বলে, সেই ইচ্ছাটা দমন করা যায় সহজেই। আর সিগারেট না খাওয়া তো স্বাস্থ্যের পক্ষেই ভালো।
পকেটে পয়সা থাকলে, অযথা রিক্সা চড়তেও ইচ্ছা করে। আর না থাকলে প্রয়োজনীয় কাজেও দীর্ঘ একটা পথ হাঁটতে হয়। হাঁটাও স্বাস্থ্যের জন্যে ভালো। তবে, পকেটে পয়সা না থাকলে, মনটাই শুধু খারাপ থাকে। আর মন খারাপ থাকা, স্বাস্থ্যের জন্যে খুবই খারাপ। মনের সাথে দেহের বোধ হয়, চমৎকার একটা যোগসূত্রই আছে।
সেদিন অফিস শেষে মন খারাপ করেই হেঁটে হেঁটে বাসায় ফিরছিলাম। অফিস থেকে উপশহর কতই বা দূর! ছয় কিলোমিটার! চল্লিশ মিনিট হাঁটলেই পৌঁছে যাবার কথা। একটা সময়ে মানুষ দশ বারো কিলোমিটার পায়ে হেঁটেই স্কুল অফিস করতো। যানবহন এর যুগে, মানুষ সেসব ভুলে গেছে! আমি মনটাকে জোড় করেই প্রফুল্লিত করতে চাইলাম। রোমান্টিক কিছু ভাবতে চাইলাম। প্রিন্সেস কনকের কথা! তার দেহ বল্লরীর দৃশ্যটাও মনের পর্দায় আনতে চাইলাম। ঠিক তখনই, আমার ভাবনার মাঝেই, হঠাৎই আমার গা ঘেষে একটা গাড়ী এসে থামলো। গ্লাসের জানালাটা নামিয়ে, মাথা বেড় করলো শিউলী। মিষ্টি হেসেই বললো, হেঁটেই চললেন?
মিষ্টি চেহারার, মিষ্টি হাসির কথার সাথেও কি মনের কোন যোগসূত্র আছে নাকি? অথবা স্বাস্থ্যের? শিউলীর মিষ্টি হাসিটা কেমন যেনো ঔষধের মতোই কাজ করলো। আমার মনটা তো মুহুর্তের মাঝে ভালো হলোই, দেহেও কেমন যেনো নুতন করেই শক্তির সঞ্চার হলো। শুধু তাই নয়, ড্রাইভিং সিট বেল্টে শিউলীর চমৎকার সুডৌল বক্ষ দুটি দুপাশে স্পষ্ট করে প্রকাশ করা দৃশ্যটা দেখে, আমার ছোট মহাশয়ও কেমন যেনো বল খোঁজে পেলো। সে আমার কোন অনুমতি না নিয়েই জাঙ্গিয়ার ভেতর থেকেই দাঁড়িয়ে, শিউলীকে মৌন অভ্যর্থনা জানালো। শিউলী বললো, যদি আপত্তি না থাকে, তাহলে গাড়ীতে উঠতে পারেন।
আমি খানিকটা ইতস্ততঃ করেই বললাম, না মানে, সারাদিন অফিসে বসে বসে কাজ! পেটে মেদ জমে যাচ্ছে! তাই, হাঁটার অভ্যাসটা করছিলাম।
শিউলী বললো, ছেলেদের পেটে এক আধটু মেদ থাকলে, খারাপ লাগে না। বরং সাহেব সাহেবই লাগে। উঠুন!
শিউলীর পাশে গাড়ীতে বসতেই বললো, বাইরে কোথাও ডিনার করলে কেমন হয়?
আমার বুকটা তৎক্ষনাত ছ্যাৎ করে উঠলো। শিউলীকে কি করে বলি যে, আমার মানিব্যাগটা পুরুপুরি খালি। বেতন পাবার আগে, বাকী একটা সপ্তাহ কিভাবে চালাবো সেই দুশ্চিন্তাতেই অস্থির! তাই আমি না শুনার ভান করে, জানালা দিয়ে বাইরে তাঁকিয়ে রইলাম।
শিউলী গাড়ী চালাতে চালাতেই বললো, কই বললেন না তো! নুতন একটা চাইনীজ রেস্টুরেন্ট হয়েছে, শুনেছি। কখনো যাইনি। এক সংগে গেলে, আমারও যাওয়া হতো।
আমি রীতীমতো তোতলাতে থাকলাম। বললাম, ভা ভা ভাবছি, আ আ আমার বা বা বাসাতেই চা চা চাইনীজ পাকাবো!
শিউলী বললো, বা বা বাসায়? চাইনীজ পাকাতে পারেন?
আমি বললাম, তু তু তুমি পা পা পাশে থাকলে, শি শি শিখে নেবো।
শিউলী এক নজর আমার দিকে তাঁকিয়ে, আবারো গাড়ী চালনায় মন দিয়ে বললো, আপনি অমন তোতলাচ্ছেন কেনো?
আমি পেছন পকেটে হাত দিয়ে বললাম, প প পকেট খালি থাকলে, চা চা চাইনীজের না না নাম শুনলে, তো তো তোতলামী এ এ এমনিতেই চলে আসে!
শিউলী ছোট একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে বললো, ওহ! তাহলে তো আপনাকে বিপদেই ফেলে দিলাম!
আমি শিউলীর দিকে তাঁকিয়ে বললাম, বি বি বিপদ?
শিউলী বললো, বিপদ না? একটা মেয়ে, চাইনীজ খাবার প্রস্তাব করছে। অথচ, পকেটে পয়সা নেই, প্রেস্টিজ তো সব পাংকচার হবার কথা!
আমি লজ্জায় মাথা নীচু করে রাখলাম। শিউলী খানিকটা থেমে বললো, ধন্যবাদ।
আমি বললাম, ধন্যবাদ কেনো?
শিউলী বললো, সত্য কথা বলার জন্যে। কিন্তু, আমার যে চাইনীজ খেতেই খুব ইচ্ছে হচ্ছে। সকালে কাদের চাচাকেও বলে এসেছি, রাতে বাইরে খাবো।
আমি বললাম, ঠিক আছে, আপনি যান! আমাকে বাসার কাছাকাছি কোথাও নামিয়ে দিলে চলবে।
শিউলী বললো, হুম, তাই ভাবছি!
এই বলে শিউলী চুপ চাপ গাড়ী চালাতে থাকলো। আমি নীরবেই বাইরের দৃশ্য দেখতে থাকলাম। অবাক হয়েই লক্ষ্য করলাম, শিউলী গাড়ী পার্ক করলো একটা অভিজাত রেষ্টুরেন্টের সামনে। তারপর, তার মোবাইলটা বেড় করে, কাদের চাচাকেই টেলিফোন করলো, কাদের চাচা, রাতে বাইরে খাবো। ফিরতেও দেরী হতে পারে।
তারপর, আমাকে লক্ষ্য করে বললো, কি ব্যাপার, নামুন!
পকেটে পয়সা না থাকলে, মানুষ বুঝি এমনিতেই বোকা হয়ে যায়। আমি বোকার মতোই চুপচাপ গাড়ী থেকে নামলাম। তারপর শিউলীকেই অনুসরন করলাম। রেষ্টুরেন্টে বসে শিউলী মেন্যুটা আমার দিকেই বাড়িয়ে ধরে বললো, কি খাবেন?
আমি মেন্যুতে চোখ বুলিয়ে সবচেয়ে সস্তা একটা খাবার দেখিয়ে বললাম, এক পিস সমুসাতেই চলবে।
শিউলী আমার দিকে তীক্ষ্ম চোখেই তাঁকালো। তারপর বললো, সিকদার ভাই, আমার কি চাকুরী করার প্রয়োজন আছে? করি শখে! বেতনের টাকা সব ব্যাংকেই জমা থাকে। টাকা নিয়ে এত ভাবছেন কেনো? আজ আমি আপনাকে খাওয়াচ্ছি! অন্যদিন না হয় আপনি খাইয়ে দিবেন!
গলপোগুজবের মাঝেই খাওয়া দাওয়াটা সময় নিয়েই শেষ হলো। রেস্টুরেন্ট থেকে ফিরতে ফিরতে রাত তখন ভালোই হয়েছিলো। শিউলী ঠিক আমার বাসাও না, নিজের বাড়ীও না, খানিকটা দূরেই একটা পাবলিক পার্কের পাশেই গাড়ী থামালো। তারপর বললো, চলুন!
আমি বললাম, এখানে?
শিউলী বললো, কারন আছে।
শিউলীর ভাব সাবটা আমি কিছুই বুঝলাম না। সে নিজেই গাড়ী থেকে নেমে। এপাশের দরজাটাও খুলে দাঁড়ালো। আমি নামতেই বললো, বাড়ীতে ফিরতে ইচ্ছে করছে না। আরো গলপো করতে ইচ্ছে করছে।
আমি বললাম, এখানে? এত রাতে?
শিউলী বললো, আপত্তি থাকলে থাক।
আমি বললাম, না মানে, পরিচিত কারো চোখে পরে গেলে!
শিউলী বললো, তাহলে গাড়ীটা এখানেই থাক। হেঁটে হেঁটে আপনার বাসায় গেলে কেমন হয়?
মাঝে মাঝে আমারও মনে হয়, প্রেম ভালোবাসার নিসংগতা শুধু ছেলেদের মাথাতেই নয়, মেয়েরা আরও জটিলভাবেই ভোগে। আমি বললাম, চলুন!

4 thoughts on “জীবন চলার পথে”

  1. আসলেই অসম্পুর্ন রয়ে গেল
    শিউলি কে এত অল্প সময়ে ছেড়ে দেয়া,
    মোহনা কে নিয়ে শেষ না করা ঠিক ভালো লাগলো না।

    লেখক দিয়ে বাকি অংশটুকো শেষ করা উচিত। অন্ততঃ আরো দুইটা পর্ব করা যেত।

    বর্ননার স্টাইল ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ লেখককে।

    Reply
    • ভেবেছিলাম শিউলি কে নিয়ে খুবই ভাল ভাবে শেষ হবে আশা করি আগামী তে বাকিটা পাবো

      Reply
  2. আসলেই অনেক সুন্দর সুন্দর গল্প এভাবেই অসম্পূর্ণ রয়ে গেল চটির জগতে।

    Reply
  3. একটু বেশী তৃষ্ণার্ত রয়ে গেল। শেষ করলে ভাল হতো। ধন্যবাদ।

    Reply

Leave a comment

error: Content is protected !!